দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
কে বাঁচায় কে বাঁচে
(বড় প্রশ্ন- মান ৫)
প্রশ্ন- “নিখিল ভাবছিল বন্ধুকে বুঝিয়ে বলবে, এ ভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না৷”- কোন প্রসঙ্গে নিখিলের এই ভাবনা? এই ভাবনার মাধ্যমে নিখিলের চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে? ১+৪=৫ (উঃ মাঃ ২০১৬)
উত্তর- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’ গল্পে নিখিল যখন জানতে পারে যে মৃত্যুঞ্জয় এবং তার স্ত্রী একবেলার খাবার বিলি করে দেয়, তখন সে ভেবেছিল মৃত্যুঞ্জয়কে বুঝিয়ে বলবে যে এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।
নিখিলের অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল বাস্তববাদী মানসিকতা। এই ভাবনার মাধ্যমে নিখিলের বাস্তববোধেরই পরিচয় পাওয়া যায়। সে জানে-
১) দুর্ভিক্ষের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ অনাহারে মরছে। সকল মানুষের খাদ্য-সমস্যার সমাধান করা একা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তাই মৃত্যুঞ্জয় এবং তার স্ত্রী একবেলার খাবার বিলি করে বা মৃত্যুঞ্জয়ের মাইনের সমস্ত টাকা রিলিফ ফান্ডে দান করেও কিছু লাভ হবে না।
২) দুর্ভিক্ষ জনিত যে অন্নাভাব তা যতখানি প্রকৃতিসৃষ্ট তার থেকে অনেক বেশি মনুষ্যসৃষ্ট। বেলাগাম কালোবাজারির ফলেই মানুষ না খেয়ে মরছে। এই অবস্থায় রিলিফ বা ত্রাণ করার অর্থ হল আড়ালে যারা মরছে তাদের মরতে দিয়ে সামনের কয়েকজনকে বাঁচানোর চেষ্টা।
নিখিলের এই ভাবনা বাস্তবতার জমিনে দাঁড়িয়ে একেবারেই খাঁটি। সে মৃত্যুঞ্জয়ের মতো ভাবপ্রবণ-আদর্শবাদী নয়, এই ভাবনা থেকে সেটাই প্রমাণিত হয়।