দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
গল্প- ভারতবর্ষ
বড় প্রশ্ন (মান ৫)
প্রশ্ন- ‘কতক্ষণ সে এই মারমুখী জনতাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারত কে জানে।’- ‘সে’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? জনতা মারমুখী হয়ে উঠেছিল কেন?
উত্তর- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে ‘সে’ বলতে আইনের রক্ষক চৌকিদারকে বোঝানো হয়েছে।
গল্পের শুরুতে দেখা যায় দুর্যোগপূর্ণ এক শীতের সকালে এক বুড়ি এসে হাজির হয়। অজ্ঞাতপরিচয় সেই বুড়ি আশ্রয় নিয়েছিল বাজারের কাছে একটি বটগাছের খোন্দলে। দুর্যোগ কাটার পর বাজারের লোকজন আবিষ্কার করে যে বুড়িটি মারা গেছে। চৌকিদারের পরামর্শে বুড়ির মরদেহ ফেলে দিয়ে আসা হয় নদীতে। এখানেই ব্যাপারটা মিটে যেতে পারত। কিন্তু বিকেলে অন্য একটি দৃশ্য দেখা যায়।
মুসলমান পাড়ার কয়েকজন লোক বুড়িকে চ্যাংদোলায় করে নিয়ে আসে কবর দেওয়ার জন্য। তাদের মতে, বুড়ি ছিল মুসলমান। গ্রামের মোল্লাসায়েবের নেতৃত্বে তারা প্রমাণ করতে চায় যে বুড়ি মুসলমান ছিল। কিন্তু হিন্দুরা একথা মানতে নারাজ। ভটচাজ মশায়ের নেতৃত্বে তারা বুড়িকে হিন্দু বলে দাবি করে এবং তাকে কবর দেওয়ার বিরোধিতা করে। উভয় সম্প্রদায়ের লোক নিজেদর স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করে এবং বুড়িকে নিজেদের বলে দাবি করতে থাকে। এরপর দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়।
ক্রমে বচসা বাড়তে থাকে এবং বুড়ির মড়া নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। উভয় পক্ষের হাতেই মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র এবং মাঝখানে দাঁড়িয়ে লাঠিহাতে বিপন্ন আইনরক্ষক চৌকিদার। এইভাবে বুড়ির মড়ার উপর নিজেদের অধিকারের দাবিতে জনতা মারমুখী হয়েছিল।