দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
গল্প- ভারতবর্ষ
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- “বুড়ির শরীর উজ্জ্বল রোদে তপ্ত বালিতে চিত হয়ে পড়ে রইল।” -বুড়ির চেহারা ও পোশাকের পরিচয় দাও৷ তার তপ্ত বালিতে পড়ে থাকার কারণ কী? ২+৩ (২০১৭)
উত্তর- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে একটি বুড়ি। ‘পউষে বাদলার’ অকাল-দুর্যোগের দিনে এক সকালে সেই বুড়ির আবির্ভাব ঘটেছিল। লেখক সুন্দরভাবে সেই বুড়ির চেহারা এবং পোশাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। সে ছিল এক থুত্থুড়ে কুঁজো বুড়ি যাকে দেখে ভিখিরি বলেই মনে হবে। তার রাক্ষুসে চেহারায় একমাথা সাদা চুল এবং মুখে দীর্ঘায়ুর ছাপ পড়েছে। তার পরনে ছিল একটি ছেঁড়া নোংরা কাপড় এবং গায়ে জড়ানো ছিল একটি চিটচিটে তুলোর কম্বল। এক হাতে বেঁটে লাঠি নিয়ে পিচের উপর হেঁটে হেঁটে হেটে এসে হাজির হয়েছিল চায়ের দোকানের সামনে।
এই বুড়ি ছিল বৃক্ষবাসিনী। বাজারের একটি বটগাছের খোন্দলে সে আশ্রয় নিয়েছিল। সময়টা ছিল শীতকাল, তার উপর একটানা কদিন ধরে বৃষ্টি পড়ছিল। সবাই ভেবেছিল এখানে থাকলে বুড়ি নির্ঘাত মারা যাবে। পরদিন সকালেই বাজারের লোকজন আবিষ্কার করল যে বুড়ি আর নড়ছে না- নিঃসাড় হয়ে পড়ে আছে। সকলেই ধরে নিল বুড়ি মারা গেছে।
অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবরটা থানায় দিয়ে এলেই ভালো হতো। কিন্তু চৌকিদারের পরামর্শে পাঁচ কোশ দূরে থানায় খবর না দিয়ে বুড়িকে ‘লদীতে’ ফেলে দিয়ে আসা হয়। কয়েকজন মিলে বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে এসেছিল। সেইজন্য উজ্জ্বল রোদে ‘তপ্ত বালিতে’ চিত হয়ে সে পড়েছিল।