বিভাব
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- “বুদ্ধিটা কী করে এল তা বলি”- কোন ‘বুদ্ধির’ কথা বলা হয়েছে? কীভাবে সেই বুদ্ধিটা এসেছিল তা সংক্ষেপে লেখো। ১+৪
উত্তর- শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটকের আলোচ্য অংশে ‘বুদ্ধিটা’ বলতে নাট্য-সরঞ্জাম ছাড়াই নাটক উপস্থাপন করার কথা বলা হয়েছে।
নাটকের শুরুতেই নাট্যকার বলেছেন যে, তাদের নাটক করার মতো প্রয়োজনীয় স্টেজ, আলো, সিনসিনারি, ঝালর ইত্যাদি কিছুই নেই- আছে শুধু নাটক করার বোকামিটা। এই দুরন্ত অভাবের মধ্যে যদিও একটা নাটক মঞ্চস্থ করা হয় তো সরকারের পেয়াদা খাজনা নিতে হাজির হয়ে যায়।
এইসব কারণে নাট্যকার শম্ভু মিত্র কোনোরকম নাট্য-উপকরণ ছাড়াই নাটক মঞ্চস্থ করা যায় কি না সেবিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন। এমন সময় তার চোখে পড়ে একটি পুরোনো বাংলা নাটক। সেখানে লেখা আছে ‘রাজা রথারোহণম নাটয়তি’, যার অর্থ- ‘রাজা রথে আরোহন করার ভঙ্গি করলেন’।
এই লেখাটিই নাট্যকারের মনে রেখাপাত করে। মঞ্চে রথও নেই, ঘোড়াও নেই অথচ রাজা এমন ভঙ্গি করতেন যে সকলের মনে হত রাজা রথে চড়লেন। পুরোনো দিনের নাটকে যদি অঙ্গভঙ্গিমার সাহায্য নেওয়া হত, তাহলে এখনকার নাটকেও তার প্রয়োগ চলতে পারে। ওড়িয়া যাত্রায় এবং মারাঠি তামাশায় একই রকমের অঙ্গভঙ্গিমার ব্যবহার লেখক দেখেছিলেন। সবশেষে রুশ চলচ্চিত্রকার আইজেনস্টাইনের একটি লেখাতে জাপানের কাবুকি থিয়েটার সম্পর্কে অনেক প্রশংসা পড়ে নাট্যকার ‘বিভাব’ নাটক মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা করেন।