“হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল…

ভারতবর্ষ

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন- “হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল”- দৃশ্যটি কী? দৃশ্যটি অদ্ভুত কেন? দৃশ্যটির পরিণাম কী হয়েছিল সংক্ষেপে লেখ। (১+১+৩)

উত্তর- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বাজারের লোকজন বিকেলে যে দৃশ্যটি দেখেছিল সেটি হল- মাঠ পেরিয়ে একটি চ্যাংদোলা এগিয়ে আসছে।

মাঠের যেদিক থেকে চ্যাংদোলাটা আসছিল সেদিকে কোন বসতবাড়ি ছিল না, তাই ওই পথে চ্যাংদোলা আসার ব্যাপারটা সকলের অদ্ভুত লেগেছিল।

ভারতবর্ষ
ভারতবর্ষ

চ্যাংদোলাটা বাজারের কাছাকাছি আসতেই বিষয়টি সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। সকালে যে বুড়ির মড়াটা নদীতে ফেলে আসা হয়েছিল সেটিকেই মুসলমান পাড়ার কয়েকজন লোক কবর দেবে বলে নিয়ে আসছিল। হিন্দুরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করে কারণ তারা জানত যে বুড়ি হিন্দু ছিল এবং হিন্দুশাস্ত্র মতে তারা বুড়িকে নদীতে ফেলে এসেছিল। কিন্তু মুসলমানরা দাবি করে যে বুড়ি মুসলমান এবং তার স্বপক্ষে তারা বেশ কিছু প্রমাণ দেয়। হিন্দুরাও নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বুড়ির হিন্দুত্বের বিবরণ দিতে থাকে। এইভাবে দু’পক্ষই বুড়িকে নিজেদের বলে দাবি করে। বুড়ি বেঁচে থাকা অবস্থায় কেউ কোনদিন তার খবর রাখেনি অথচ সে মারা যাওয়ার পর তার মরদেহকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। ক্রমশ সেই বিবাদ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রূপ নিতে থাকে। এইভাবে, বিকেলে যে অদ্ভুত দৃশ্যের সূচনা হয়েছিল তা একসময় ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিল।

সবশেষে, যখন গ্রামের লোক জানতে পারল বুড়ি জীবিত তখন উত্তেজনা ভুলে সকলেই আশ্চর্য হয়েছিল এবং বুড়ির কাছে তার ধর্ম-পরিচয় জানতে চেয়েছিল। বুড়ি তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে, কারো কোনো প্রশ্নের সদুত্তর না দিয়ে, “শেষ রোদের আলোয়” প্রস্থান করেছিল।

error: Content is protected !!