বাংলার শিল্প-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বাঙালির চিত্রকলা

বড় প্রশ্ন (মান-৫)

প্রশ্ন-বাংলার শিল্পশিক্ষার ইতিহাস আলোচনা কর।  

উত্তর- উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকেই কলকাতায় শিল্প-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। ১৮৩৯ সালে স্থাপিত হয় ‘মেকানিক্যাল ইন্সটিটিউট’। এখানে নির্মিতিমূলক বুনিয়াদি অঙ্কন শেখানো হত। তবে শীঘ্রই এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।

বাংলার শিক্ষার ইতিহাস
বাংলার শিল্পশিক্ষার ইতিহাস

এরপর ১৮৫৪ সালে বেসরকারি উদ্যোগে গঠিত হয় ‘সোসাইটি ফর দি প্রোমোশন অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্ট’। এই সোসাইটির অর্থানুকুল্যে স্থাপিত হয় ‘দি ক্যালকাটা স্কুল অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্ট’। ১৮৬৫ সালে সরকার এই প্রতিষ্ঠানটি অধিগ্রহণ করে। এরপর এর নাম হয় ‘গভর্নমেন্ট স্কুল অফ আর্ট’। স্বাধীনতার পরে ১৯৫১ সালে এই বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় ‘গভর্নমেন্ট কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট’। যাইহোক, ১৮৬৪ সালে এই স্কুলের অধ্যক্ষ্য হয়ে আসেন হেনরি হোভার লক। তাঁর প্রচেষ্টাতেই কলকাতায় আধুনিক শিল্পশিক্ষার সূচনা হয়। তাঁর সুযোগ্য ছাত্রদের মধ্যে কয়েকজন হলেন- অন্নদাপ্রসাদ বাগচী, শ্যামচরন শ্রীমানী প্রমুখ। লক এখানে একটি আর্ট গ্যালারিও স্থাপন করেন। ১৮৯৬ সালে আর্নেস্ট বিনকল্ড হ্যাভেল এই স্কুলের প্রধান হিসেবে যোগ দেন। তিনিই প্রথম স্বদেশি শিল্প-পরম্পরার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন।

১৮৯৩ সালে আলোকচিত্রী মন্মথনাথ চক্রবর্তী স্থাপন করেন একটি শিল্পশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নাম ‘দি ইন্ডিয়ান স্কুল অফ আর্ট’।বর্তমানে এর নাম ‘দি ইন্ডিয়ান কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ড্রাফ্‌টম্যানশিপ’।

আর্ট স্কুলেরই ছাত্র রণদাপ্রসাদ গুপ্ত প্রতিষ্ঠা করেন ‘জুবিলি আর্ট একাডেমী’(১৮৯৭)। এখানে ব্রিটিশ চিত্ররীতির হুবুহু অনুসরণ করা হত। এখানকার কয়েকজন কৃতী ছাত্রের মধ্যে অতুল বসু, বসন্ত গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখের নাম করা যায়।

অবনীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে ১৯০৭ সালে স্থাপিত হয় ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ ওরিয়েন্টাল আর্ট’। তিনি আবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে একটি শিল্পবিদ্যালয় স্থাপন করেন। নন্দলাল বসু, মুকুল দে প্রমুখ তাঁর সুযোগ্য ছাত্রের কয়েকজন।

বাংলায় শিল্পশিক্ষার ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথেরও স্মরণীয় অবদান রয়েছে। ১৯১৯ সালে তিনি বিশ্বভারতীর অংশ হিসেবে ‘কলাভবন’ স্থাপন করেন। বাংলা তথা ভারতের বহু স্বনামধন্য শিল্পী এই কলাভবনের শিল্পশিক্ষার পাঠ নিয়েছিলেন।

error: Content is protected !!