বাংলা সিনেমার ইতিহাস
সূচিপত্র
বিনোদনের সবথেকে জনপ্রিয় মাধ্যম হল সিনেমা। বাংলা সিনেমার ইতিহাসও বেশ দীর্ঘ। দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্য ‘বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস’ অধ্যায়ে সেসবই আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায় থেকে যেমন অনেকগুলি বড় প্রশ্ন রয়েছে তেমনি প্রায় প্রতি লাইনেই রয়েছে শর্ট-এমসিকিউ প্রশ্ন। নীচের ভিডিওটি দেখলে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস থেকে যেকোনো শর্ট-এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে।
সিনেমার ইতিহাস
সিনেমা তৈরি করেন প্যারিসের লুমিয়ের ভ্রাতৃদ্বয়। বাংলা সিনেমার জন্ম বিশ শতকের প্রথম দিকে। বাংলা সিনেমা শিল্পে প্রথম উদ্যোগি পুরুষ ছিলেন হীরালাল সেন। বাংলা তথ্যচিত্রের জনকও হীরালাল সেন। সেইসব সিনেমা ছিল ‘ভিডিও ক্লিপিংস’ এর মতো। পরে আসে কাহিনিচিত্র অর্থাৎ কোনো একটি গল্প নিয়ে সিনেমা। এখন যেমন করে সার্কাসের আসর বসে তখন এইরকম অস্থায়ী আস্তানাতে সিনেমা দেখানো হত। সব সিনেমাই ছিল নির্বাক। নির্বাক যুগে বেশ কিছু সাহিত্যনির্ভর সিনেমা তৈরি হয়েছিল। বাংলা সবাক সিনেমার যাত্রা শুরু ‘জামাইষষ্ঠী’ সিনেমার মাধ্যমে। তবে বাংলা সিনেমা পরিপুর্ন সাবালক হয়েছিল তারা হলেন-
বিখ্যাত বাঙালি চিত্রনির্মাতা
সত্যজিত রায় (১৯২১-১৯৯২)- বাংলা তথা ভারতের সর্বকালের সেরা চলচিত্র নির্মাতাদের মধ্যে একজন সত্যজিত রায়। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল- পথের পাঁচালী, অপরাজিত, পরশপাথর, জলসাঘর, অপুর সংসার, দেবী, তিন কন্যা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, অভিযান, মহানগর, চারুলতা,চমহাপুরুষ, নায়ক, চিড়িয়াখানা, গুপী গাইন বাঘা বাইন, অরণ্যের দিনরাত্রি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রভৃতি।
ঋত্বিক ঘটক (১৯২৫-১৯৭৬)- একাধারে পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার এবং অভিনেতা। ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত বিখ্যাত ছবিগুলি হল- নাগরিক (১৯৫২, মুক্তি ১৯৭৭), অযান্ত্রিক (১৯৫৮), বাড়ি থেকে পালিয়ে (১৯৫৮), মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০), কোমল গান্ধার (১৯৬১), সুবর্ণরেখা (১৯৬২), তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩), যুক্তি তক্কো আর গপ্পো (১৯৭৭)।
তপন সিংহ (১৯২৪-২০০৯)- বাংলা এবং হিন্দি উভয় ভাষার সিনেমাতেই সাফল্যের নজির গড়েছিলেন তপন সিংহ। তার উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল-হুইল চেয়ার (১৯৯৪) , এক ডক্টর কি মউত(১৯৯১), আজ কা রবিনহুড (১৯৮৭), আতঙ্ক (১৯৮৬), অভিমন্যু (১৯৮৩) , বাঞ্ছারামের বাগান (১৯৮০) , সবুজ দ্বীপের রাজা (১৯৭৯), সফেদ হাতি (১৯৭৭), সাগিনা (১৯৭৪), জিন্দেগি জিন্দেগি (১৯৭২), সাগিনা মাহাতো (১৯৭০), আপনজন(১৯৬৮), হাটে বাজারে (১৯৬৭), গল্প হলেও সত্যি (১৯৬৬), আরোহী (১৯৬৫), অতিথি (১৯৬৫), জতুগৃহ (১৯৬৪), নির্জন সৈকতে (১৯৬৩), হাঁসুলী বাঁকের উপকথা (১৯৬২), ঝিন্দের বন্দী (১৯৬১), ক্ষুধিত পাষাণ (১৯৬০), কাবুলীওয়ালা (১৯৫৬), উপহার (১৯৫৫), অঙ্কুশ (১৯৫৪)
মৃণাল সেন (১৯২৩- ) ১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম পরিচালিত ছবি রাতভোর মুক্তি পায়। তাঁর দ্বিতীয় ছবি নীল আকাশের নীচে । তাঁর তৃতীয় ছবি বাইশে শ্রাবন থেকে তিনি আর্ন্তজাতিক পরিচিতি পান। ১৯৬৯ সালে তাঁর পরিচালিত ছবি ভুবন সোম মুক্তি পায়। এই ছবিটি অনেকের মতে মৃণাল সেনের শ্রেষ্ঠ ছবি। ইন্টারভিউ (১৯৭১), ক্যালকাটা ৭১ (১৯৭২) এবং পদাতিক (১৯৭৩) ছবি তিনটির মাধ্যমে তিনি তৎকালীন কলকাতার অস্থির অবস্থাকে তুলে ধরেছিলেন। অন্যান্য ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এক দিন প্রতিদিন (১৯৭৯), খারিজ (১৯৮২), আকালের সন্ধানে, মহাপৃথিবী (১৯৯২) এবং অন্তরীন (১৯৯৪)।
এই চারজ্জন দিকপাল পরিচালক ছাড়াও অন্যান্য চলচিত্র ব্যক্তিত্ব বাংলা সিনেমাকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন। আলোচ্য অধ্যায়ে অন্যান্য যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলি হল- নির্বাক ও সবাক যুগের বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং কলাকুশলীদের পরিচয়, বিভিন্ন কালপর্বে বাংলা সিনেমার প্রবনতা প্রভৃতি। সংসদ প্রদত্ত বইটি পাঠ করলে বাংলা চলচিত্রের ইতিহাস সম্পর্কে আরো অনেক কথা জানা যাবে।
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
এমসিকিউ টেস্ট
বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস অধ্যায় থেকে নির্বাচিত কিছু প্রশ্ন দিয়ে এই মক টেস্টটি সাজানো হয়েছে। যদি মুল বইটি পড়া থাকে তাহলে অনায়াসে উত্তর দিতে পারবে। উপরের ভিডিওটি দেখলে পরীক্ষার সময় যেকোনো শর্ট-এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে।