দ্বাদশ শ্রেণি
বাঙালির ক্রিড়াসংস্কৃতি
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- কলকাতায় বাঙালির প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা প্রথম স্বদেশী সার্কাসের নাম লেখো ৷ সার্কাসে বাঙালির অবদানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ৷ ১+৪
উত্তর- কলকাতা শহরে বাঙালির প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা প্রথম স্বদেশী সার্কাসের নাম হলো ন্যাশনাল সার্কাস (১৮৮৩)।
সার্কাসে বাঙালির অবদান- হিন্দুমেলার প্রাণপুরুষ নবগোপাল মিত্র ছিলেন ন্যাশনাল সার্কাসের প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু তার এই প্রচেষ্টা সাফল্য পায়নি। এর কিছুদিন পরেই গঠিত হয় গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস। এই সার্কাসটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল কিন্তু এটিও বেশিদিন চলেনি। এরপরই আসে ইতিহাস সৃষ্টিকারী গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস।
গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস- বন্ধ হয়ে যাওয়া ন্যাশনাল সার্কাস এবং গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস-এর জন্তু-জানোয়ার, সাজ-সরঞ্জাম কিনে ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ প্রতিষ্ঠা করেন বিখ্যাত নাট্যকার মনোমোহন বসু রিছেলে প্রিয়নাথ বসু। তখনকার দিনে সার্কাস বা শরীরচর্চার কোচদের প্রফেসর নামে ডাকা হতো এবং প্রিয়নাথ বসু প্রফেসর বোস নামে খ্যাত ছিলেন। এই সার্কাসের প্রদর্শন শুরু হয়েছিল প্রথমে বাংলার বাইরে এবং তার পরে কলকাতায়। সমগ্র ভারতেই গ্রেট বেঙ্গল সার্কাসের খ্যাতি ছিল।
গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস এই সর্বপ্রথম বাঘের খেলা দেখানো শুরু হয়েছিল সেসময় বাঘের খেলা দেখিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন বাদলচাঁদ এবং সুশীলাসুন্দরী। উল্লেখ্য যে, সুশীলাসুন্দরীই প্রথম বাঙালি নারী যিনি সার্কাসে বাঘের খেলা দেখাতেন।
প্রফেসর বোসের সার্কাসের খ্যাতি শুধুমাত্র ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ভারতের বাইরেও বিভিন্ন দেশে গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস খেলা দেখিয়েছিল। প্রিয়নাথ বসুর লেখা ‘প্রফেসর বোসের অপূর্ব ভ্রমণ-বৃত্তান্ত’ গ্রন্থে সেইসব বিচিত্র ভ্রমণ-অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ রয়েছে। তাঁর সুযোগ্য পুত্র অবনীন্দ্রকৃষ্ণ বসুর লেখা ‘বাঙালির সার্কাস’ বইটি থেকেও প্রিয়নাথ বসুর সার্কাসের নানা কথা জানা যায়।