সংক্ষেপে বাঙালির কুস্তি চর্চার পরিচয়

দ্বাদশ শ্রেণি

বাঙালির ক্রিড়াসংস্কৃতি

বড় প্রশ্ন (মান ৫)

প্রশ্ন- আমাদের মহাকাব্যে ‘কুস্তি’ কী নামে পরিচিত ছিল? সংক্ষেপে বাঙালির কুস্তি চর্চার পরিচয় দাও। ১+৪

উত্তর- আমাদের মহাকাব্যে কুস্তি মল্লযুদ্ধ নামে পরিচিত ছিল।

আধুনিক ভারতে কুস্তি খেলার প্রচলন এবং প্রসারে দেশীয় রাজন্যবর্গ বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভারতের মধ্যে প্রথম কুস্তি চর্চা শুরু হয় বরোদাতে। বরোদার মহারাজ খাণ্ডেরাম কুস্তির উন্নতির জন্য বিশেষভাবে যত্নবান ছিলেন। বাংলাতেও কুস্তির পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ন, মুর্শিদাবাদের নবাব সহ বেশ কয়েকজন বিত্তবান রাজা এবং জমিদার। মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়নেরর উদ্যোগে ১৮৯২-৯৪ সালের মধ্যে ভারতে প্রথম বিশ্ব কুস্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং প্রতিযোগিতায় জিতে করিম বক্স বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কুস্তিগিরের মর্যাদা লাভ করেছিলেন।

এক সময় কুস্তি ছিল বাংলাদেশের বাবু সংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ। কুস্তি চর্চার জন্য কলকাতাসহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য আখড়া গড়ে উঠেছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এইসব আখড়ায় গিয়ে শরীর চর্চা করতেন।

বাঙালির কুস্তিচর্চার ইতিহাসে যাদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তারা হলেন- শ্যামাকান্ত নন্দী, যতীন্দ্রচরণ গুহ, ফণীন্দ্রকৃষ্ণ গুপ্ত প্রমূখ। এঁদের মধ্যে যতীন্দ্রচরণ গুহ বা গোবর গুহ ভারতীয় কুস্তিকে আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করেছিলেন। তিনি প্রথম এশীয় হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত বিশ্ব লাইট হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন। গোবর গুহ ভারতীয় কুস্তিরীতিতে অনেক নতুন প্যাঁচ উদ্ভাবন করেছিলেন। সেগুলি হল ধোঁকা, গাধানেট, ঢাক, পাট কুল্লা ইত্যাদি।

error: Content is protected !!