আমি দেখি
কবি- শক্তি চট্টোপাধ্যায়
মূল গ্রন্থ- অঙ্গুরি তোর হিরণ্য জল
১। ‘আমি দেখি’ কবিতায় কবির বৃক্ষপ্রীতি কীভাবে ফুটে উঠেছে তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। অথবা,
‘আমি দেখি’ কবিতার মূল ভাব নিজের ভাষায় লেখ।
উত্তর- শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি দেখি’ কবিতায় সবুজের জন্য কবিমনের হাহাকারের কথাই কাব্যরূপ লাভ করেছে । কবিতার শুরুতেই কবি বলেছেন- ‘গাছগুলো তুলে আনো, বাগানে বসাও’। কোনরকম রাখঢাক না করেই কবি অকপটে গাছের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন- ‘আমার দরকার শুধু গাছ দেখা’। সবুজের প্রতি কবির এই গভীর আকাঙ্ক্ষার দুটি কারণ –
সবুজের বিচ্ছেদবেদনা- একসময় কবিপ্রাণের নিত্য-গন্তব্য ছিল অরণ্য। কিন্তু কবির আক্ষেপ- ‘বহুদিন জঙ্গলে কাটেনি দিন/ বহুদিন জঙ্গলে যাইনি’। বর্তমানে কবি নগর-জীবনের অধিবাসী। নগর মানেই চারিদিকে ধূসর কংক্রিটের সাম্রাজ্য, সেখানে সবুজের অনটন ঘটে। আসলে, অজস্র্য বৃক্ষনিধনের মধ্য দিয়েই নগরায়ন সম্পন্ন হয়। কবি একান্তভাবেই সবুজের কামনা করেন।
আরোগ্যের জন্য সবুজ- ব্যস্ত নাগরিক-জীবন মানুষের প্রাণশক্তি নিংড়ে নেয়- মানুষকে ক্লান্ত-শ্রান্ত করে তোলে। চারিদিকে সবুজের হাহাকার মানুষকে রোগগ্রস্ত করে তোলে। কবিও এখন নাগরিক-জীবন যাপন করেন। তাঁর প্রাণের প্রতিবেশে এখন আর সবুজের সমারোহ নেই। কিন্তু কবি বোঝেন যে ‘শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায়’ । জরাগ্রস্ত নগরজীবনে ‘আরোগ্যের জন্য ঐ সবুজের ভীষণ দরকার’।
তবে কবির আকুলতা সবচেয়ে বেশি কবির গাছ দেখার জন্য। তিনি দু’চোখ ভরে গাছ দেখতে চান- আর চান দেহ দিয়ে তাদের অনুভব করতে। শহরের একফালি জমিতে বাগান বানানো হোক- কবি শুধু দেখে যেতে চান।