ভারতীয় গল্প অলৌকিক
লেখক- কর্তার সিং দুগ্গাল
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- ‘অলৌকিক’ গল্পে হাত দিয়ে পাথরের চাঁই থামানোর ঘটনাটি লেখক প্রথমে বিশ্বাস করেননি কেন? পরে কীভাবে সেই ঘটনা তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠল? ২+৩ (২০১৮)
উত্তর- কর্তার সিং দুগ্গালের ‘অলৌকিক’ গল্পের প্রথম অংশে গুরু নানকের জীবনের একটি প্রচলিত কাহিনি রয়েছে। গুরু নানকের অন্যতম শিষ্য মর্দানার জল তেষ্টা পেয়েছিল কিন্তু বলী কান্ধারী তাকে জল দিতে অস্বীকার করেছিল। সবশেষে, গুরু নানকের পরামর্শে মর্দানা একটি পাথর সরাতেই অফুরান জলের স্রোত দেখা যায় এবং সেই জলে মর্দানার তেষ্টা মিটেছিল। ওদিকে বলী কান্ধারীর আশ্রমের কুয়ো তখন জলশূন্য। নীচে সশিষ্য গুরু নানককে দেখে ক্ষিপ্ত কান্ধারী একটি পাথরের চাঙড় গড়িয়ে দিয়েছিল। গুরু নানক শান্ত স্বরে ‘জয় নিরংকর’ বলে হাত দিয়ে সেই পাথরের চাঙড় থামিয়ে দিয়েছিলেন। ঘটনাটি অবিশ্বাস্য বলেই লেখক প্রথমে এই কাহিনি বিশ্বাস করতে পারেননি।
এই গল্পটি শোনার কিছুকাল পরে একবার সাকা হয়েছিল। সেই উপলক্ষে লেখক তাঁর মা-বোনের সঙ্গে পাঞ্জাসাহেবে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর মায়ের বান্ধবীর মুখে একটি ঘটনার কথা জানতে পারেন। ঘটনাটি এরকম-
একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দূরের শহরে ইংরেজরা নির্বিচারে ভারতীয়দের উপর গুলি চালিয়েছিল। বাকিদের দূরবর্তী শহরের জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কয়েদিদের নিয়ে সেই ট্রেন পাঞ্জাসাহেবের উপর দিয়ে যাবার কথা ছিল। এটা শুনে পাঞ্জাসাহেবের সাধারণ মানুষ ক্ষুধার্ত-তৃষ্ণার্ত কয়েদিদের জন্য খাবার-পানীয়ের ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু পাঞ্জাসাহেবে ট্রেন থামবার কথা ছিল না। স্থানীয় মানুষের বহু অনুরোধ সত্বেও ট্রেন রেল কর্তৃপক্ষকে রাজি করানো যায়নি। শেষপর্যন্ত কয়েকজন মানুষ রেললাইনে বুক পেতে ঝড়ের বেগে ছুটে আসা ট্রেনটি থামিয়ে দিয়েছিল।
এই ঘটনার কথা শোনার পর হাত দিয়ে পাথর থামানোর ঘটনাটি লেখক বিশ্বাস করেছিলেন। লেখকের মতে “ঝড়ের বেগে ছুটে আসা ট্রেন থামানো গেলো, পাথরের চাঁই থামানো যাবে না কেন?”