অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রকলা

বাঙালির চিত্রকলা

প্রশ্ন- বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা কর। (৫)

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রকলা চর্চা
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রকলা

উত্তর– অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর(১৮৭১- ১৯৫১) ছিলেন আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার একজন অন্যতম পথিকৃৎ। নব্যবঙ্গীয় চিত্ররীতিরও জনক তিনি। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির এই কৃতী পুরুষটি ছোটবেলায় অঙ্কনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ড্রয়িং, প্যাস্টেল, জলরং এবং অয়েল পেইন্টিং শিখেছিলেন বিদেশী শিল্পীদের কাছে। এই তালিকায় রয়েছেন ইংরেজ শিল্পী পামার, জাপানী শিল্পী টাইকান প্রমুখ।একসময় তাঁর হাতে আসে আইরিশ ইল্যুমিনেশন এবং মুঘল মিনিয়েচারের কিছু নিদর্শন। কিন্তু এইসকল শিল্পকর্ম তাঁকে তৃপ্ত করতে পারেনি। শেষপর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরামর্শে তিনি ভারতীয় সনাতন চিত্রাঙ্কন-রীতি পুনরুদ্ধারের সাধনা শুরু করেন। তাঁর চিত্রচর্চার বিষয় হয় বৈষ্ণব পদাবলী। 

এই বৈষ্ণব পদাবলীকে অবলম্বন করে তিনি এঁকেছিলেন বিখ্যাত ‘শ্বেতঅভিসারিকা’। তারপরেই কৃষ্ণলীলা সিরিজের ছবিগুলি তাঁকে বিশেষ খ্যাতি এনে দিয়েছিল। বলা হয় যে, এই কৃষ্ণলীলা সিরিজের ছবিগুলির মাধ্যমেই আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার জয়যাত্রা শুরু হয়। চিত্রশিল্পী হিসেবে তিনি এই সময় থেকেই আন্তর্জাতিক পরিচিতি পেতে থাকেন। 

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ওয়াশ’ পদ্ধতিতে ছবি আঁকতেন। জলরঙ্গে আঁকা ছবিগুলি তিনি বারবার ধুয়ে ফেলতেন যা ওয়াশ পদ্ধতি নামে পরিচিত। এরফলে ছবিগুলিতে রঙের চরিত্র হয়ে উঠত কোমল। ছবিগুলি দৃশ্যমান জগতের চেয়ে বেশি অনুভূতির জগতকে তুলে ধরত।

তাঁর বিখ্যাত ছবির তালিকায় রয়েছে ‘কচ ও দেবযানী’, ‘ভারতমাতা’, ‘অশোকের রানি’, ‘দেবদাসী’, ‘কাজরীনৃত্য’, ‘অন্তিমশয্যায় শাহজাহান, প্রভৃতি।

error: Content is protected !!