আমার বাংলা
মেঘের গায়ে জেলখানা
বড় প্রশ্ন (মান-৫)
প্রশ্ন- “এরা সব সাধুচরণের অতীত”- ‘এরা’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? এই প্রসঙ্গে মুস্তাফার পরিচয় দাও।
উত্তর- সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে বক্সার জেলে বন্দী একদল কিশোর অপরাধীর পরিচয় পাওয়া যায়। প্রশ্নোদ্ধৃত ‘এরা’ বলতে এই কিশোর কয়েদিদের কথাই বলা হয়েছে।
বক্সার জেলখানার সাত ইয়ার্ডের নিচে শিশু-কিশোর অপরাধীদের থাকার জায়গা। জেলের পরিভাষায় বলা হয় ‘ছোকরা ফাইল’। সেখানেই থাকে মুস্তাফা নামের একটি ছেলে।
মুস্তাফা ভালো পরিবারের ছেলে। তার বাড়ি ছিল এন্টালির কাছাকাছি কোন এক জায়গায়। তার বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। একদিন কাজ করার সময় উঁচু বাঁশের মাচা থেকে পড়ে তার বাবা প্রাণ হারায়। আচমকাই বদলে যায় তাদের পরিবারের চালচিত্র। মা-ভাইবোন সহ সমস্ত পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্বভার এসে পড়ে মুস্তাফার কাঁধে। এদিকে, পয়সার অভাবে তার পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যায়।
পাড়াতে থাকত এক পকেটমারের সর্দার। সে মুস্তাফাকে পয়সার লোভ দেখিয়ে পকেটমারের দলে টানে। ধরা পড়ে কয়েকবার তাকে জেলে যেতে হয়েছে। বাস্তব পৃথিবীটা সে অনেক কম বয়সেই দেখে ফেলেছিল। তাই কিশোরসুলভ কোনো ভাবই তার মধ্যে ছিল না।
বছর দশেকের ফুটফুটে ছেলে মুস্তাফা আজ আর কাউকে কেয়ার করে না। তাই লেখক যখন তাকে জিজ্ঞেস করেন যে তার ইস্কুলে যেতে ইচ্ছে করে কি না, উত্তরে সে বিজ্ঞের মতো জবাব দেয়- “ইচ্ছে করলেই কি যাওয়া যায়”?