লুকিয়ে গ্রিনরুমে ঘুমোই চটুজ্জেমশাই

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা

নানা রঙের দিন 

বড় প্রশ্ন (মান-৫) 

প্রশ্ন- “আমি রােজ লুকিয়ে লুকিয়ে গ্রিনরুমে ঘুমোই চটুজ্জেমশাই, কেউ জানে না” – কোন নাটকের অংশ? বক্তা কে? তিনি কেন গ্রিনরুমে ঘুমান? ১+১+৩ (২০১৮)

উত্তর- প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নানা রঙের দিন’ নাটকের সংলাপ।

উদ্ধৃত উক্তিটি পেশাদারি থিয়েটারের প্ৰম্পটার কালীনাথ সেনের। উল্লেখ্য যে, দুই চরিত্রবিশিষ্ট এই একাঙ্ক নাটকের একটি চরিত্র হলেন প্রাক্তন অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় এবং অপর চরিত্রটি হল এই কালীনাথ সেন।

কালীনাথ ছিল একজন প্ৰম্পটার। পেশাদারি থিয়েটারের একজন প্ৰম্পটারের বেতন অতি সামান্য। কলকাতা শহরে বাড়ি তৈরি করা বা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকার মতো সামর্থ্য তার ছিল না। সেইজন্য থিয়েটারের গ্রিনরুমই ছিল তার রাত্রিকালীন ঠিকানা। গ্রিনরুম হল সেই ঘর যেখানে নাটকের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সাজসজ্জা করে। নাটক শেষ হবার পর, সব পাত্র-পাত্রী এবং কলাকুশলী চলে গেলে কালীনাথ গ্রিনরুমে ঘুমোত। অবশ্য একথা কেউ জানতো না। কথাটা মালিকের কানে গেলে হয়তো তার এই আশ্রয়টুকুও যেত।

আরেকটি কথা এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। রজনীবাবুর মতো কালীনাথ সেনও অকৃতদার ছিল। রজনীকান্তের তবু নিজস্ব ঘর ছিল, রাত্রে ঘুমোনোর জায়গা ছিল। কিন্তু কালীনাথের ঘর-সংসার, স্ত্রী-সন্তান কিছুই ছিল না। সেইজন্য থিয়েটার ছেড়ে অন্য কোথাও যাবার তার বিশেষ প্রয়োজনও ছিল না। এইজন্য কালীনাথ রোজ গ্রিনরুমেই ঘুমোত।

error: Content is protected !!